আমি সাইমুম মেহেরুন, পিতা মৃত হাজী কুদরত আলী ভূইঁয়া, গ্রাম- বড়ইচারা, ইউনিয়ন-পাকশিমুল, উপজেলা- সরাইল, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
অতিসম্প্রতি আমার শ্রদ্ধেয় সৎ ভাই তাজুল ইসলাম ভূইঁয়া আমাদের করা সংবাদ সম্মেলনের এক প্রতিবাদে লিখেছেন, আমার প্রয়াত বাবা নাকি ১৯৭৯ সালে বংশের মুুরুব্বিদের ডেকে এনে জমি-জমা বন্টন করে গেছেন। তার (তাজুল ইসলাম) এই কথাগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তিনি আরও লিখেছেন, বিগত ১৯৯০ সালে নাকি ভূূমি জরিপকালে আমাদের পিতা হাজী কুদরত আলী ভূইঁয়া জরিপ কর্মকর্তা ও কর্মচারিদেরকে বাড়িতে এনে আমাদের পিতার হেফাজতে থাকা সকল রেকর্ড পর্যালোচনা করে ভাইদের নামে বি.এস খতিয়ান করে গেছেন। তার (তাজুল) এই কথাটিও মিথ্যা ও বানোয়াট।
আমার প্রয়াত বাবার সকল সম্পত্তির বি.এস ভাইদের নামে; বোনদের নামে কোনো বি.এস নাই। এটা আমাদের সৎ ভাইদের কারসাজি। আমার সৎ ভাইয়েরা সবাই মিলে আমার বাবাকে না জানিয়ে জরিপকর্তাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে সকল সম্পত্তি তারা তাদের নিজেদের নামে বি.এস খতিয়ান করে ফেলেন। প্রথমদিন যখন বাবার নামে কিছু জমি বি.এস খতিয়ান করায়; তখন ভাইয়েরা উত্তেজিত হয়ে বাবার ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করে ও অসুস্থ বাবাকে গৃহবন্দী করে রাখে। এগুলো বাবা সহ্য করতে না পেরে ষ্ট্রোক করে বাবার একপাশ অবশ হয়ে যায়। তখন তারা নিজেদের ইচ্ছেমত সম্পত্তিতে ভাগ বসিয়ে বি.এস খতিয়ান করে ফেলেন নিজেদের নামে। গ্রামবাসী বিষয়টা অবগত আছেন।

২০১৫ সালে সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর আমরা জানতে পারি সব ভাইদের নামে বি.এস খতিয়ান হয়েছে। তখন আমরা তাদের কাছে আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ন্যায্য ভাগ চাই; কিন্তু তারা আমাদেরকে সম্পত্তির কোনকিছু দিতে নারাজ। তখন বাধ্য হয়ে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হই। আদালতে মামলা চলাকালীন সময়েও ভাইয়েরা জমি বিক্রি করতেছে। তাই আমি ১৪৪ ধারা দায়ের করি। ১৪৪ ধারা দায়ের করায় আমাদের সৎ ভাইয়েরা ও তাদের সন্তানরা উত্তেজিত হয়ে আমাদের ঘর ভাংচুর, মারধর ও লুটপাট করে। তারপর আমি সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করি যাহার নং জি.আর ৩৩৩/১৭। তখন তারা গোষ্ঠির মুরুব্বিদের ডেকে বলে বিষয়টা নিষ্পত্তি করে দিতে। মুরুব্বিরা তখন বিষয়টা শেষ করে দিয়েছিলেন এবং একটা রায় করেছিলেন যে, ৬,৪০,০০০/-(ছয় লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা), ৩ শতক বাড়ি, বিলের ৩ কানি জমি সৎ ভাইয়েরা আমাদেরকে দেবেন। গোষ্ঠির মুরুব্বিরা যে রায় দেন সেটি মামলার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে জানিয়ে সৎ ভাইয়েরা দাবি করেন, বিষয়টা সুরাহা হয়ে গেছে। এই ফাঁকে আমাদের সৎ ভাই রফিকুল ইসলাম ভূইঁয়া ও তাজুল ইসলাম ভূইঁয়া দায়ের করা মামলার চার্জশীট থেকে তার তাদের নাম কাটিয়ে নেন। আর বিষয়টা যেহেতু শেষ হয়ে গেছে তাই আমি আর এ চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেই নাই। তখন তো আমি বুুঝি নাই তাদের মনে আমাদেরকে কিছু না দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এমনি করতে করতে ২ বছর পার হয়, ধীরে ধীরে আমরা বুঝতে পারি তাদের পরিকল্পনার কথা। তখন পুনরায় আমি বিষয়টা গোষ্ঠির এবং গ্রামের সবাইকে জানাই। তখন তারাও ব্যর্থ হন। পরে বিষয়টি লিখিত আকারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়কে জানাই এবং সুবিচার প্রার্থনা করি।
সৎ ভাই তাজুল ইসলাম ভূইঁয়া সংবাদ প্রতিবাদে আরও বলেন, সম্পত্তির বিষয়ে আদালতের নিস্পত্তির অপেক্ষায় আছি। আমরাও তাই ছিলাম। কিন্তু এখন আবার পুনরায় যখন জমি বিক্রি করার পরিকল্পনা করে সৎ ভাইয়েরা, তখন আমরা এতে বাধা প্রদান করি। আমি বাধা প্রদান করায় আমাকে ও আমার মা বোনকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সৎ ভাইয়েরা। এরই ধারাবাহিকতায় আমি সরাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করি। এখন তারা উঠেপড়ে লেগেছে আমার অভিযোগটা মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য।
তাজুল ইসলাম ভাই আরও বলেন, আমাদের বসবাসের ঘরটা তাজুল ভাই তৈরি করে দিয়েছে; এটা মিথ্যা কথা। ওই ঘরে আমার বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় বসবাস করতেন; যা পরর্বতীতে বাবার মৃত্যুর পর ঘরটি ভেঙ্গে ২টি ঘর নির্মাণ করা হয়। যাহাতে একটি ঘরে আমি আমার মা ও বোনকে নিয়ে বসবাস করছি। মায়ের কিছু স্বর্ণালংকার ছিল যা দিয়ে মা আমরা তিন বোনকে লালন-পালন করেছে। পরে আমরা যখন একটু বড় হই তখন আমরা টিউশনি, সেলাই কাজ শুরু করি যা দিয়ে আমাদের সংসার ভালোই চলত।
তাজুল ভাই বলেন যে, মমতাজ মেহরুন এবং সামী মেহরুনের বিয়ের সব স্বর্ণালংকার ও সমস্ত খরচ বহন করেছেন; এটা মিথ্যা ও বানোয়াট। মমতাজ মেহরুন ও সামী মেহরুনকে কোন অলংকার দেয়নি তারা (সৎ ভাইয়েরা)। সব অলংকার মমতাজ মেহরুন ও সামী মেহরুনের শ্বশুরবাড়ি থেকে দেয়া। মমতাজ মেহরুনের বিয়ের টাকা সব আমাদের বিধবা মায়ের ধার-দেনা করে আনা। প্রমাণ স্বরূপ বড়ইচারা ভূইঁয়া বাড়ির গুলজি বেগম ও মোল্লাবাড়ির খুরশিদ মিয়ার বউ। সামী মেহরুনের বিয়ের খরচ সব আমার বড় বোনের জামাই গোলাম মোস্তফা বাবুলের দেওয়া। প্রমাণ স্বরূপ অরুয়াইল বাজারের মোবাইল মেলা দোকানের মালিক বশির আহাম্মদ এর কাছে পাটানো টাকা।
পরে আমাদেরই গোষ্ঠির আরেক ভাই আবুল কালাম-এর ছেলে জিয়াউল হক’কে দিয়ে ভৈরব বাজারে পাঠানো হয়; যা দিয়ে বিয়ের সব বাজার করা হয়।তাজুল ভাই বলেন, বোনদের বিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে দিয়েছেন। ওটা আসলে কমিউনিটি সেন্টার নয় প্রেসক্লাব ছিল। তাজুল ভাই বলেছেন, আমার মায়ের পরনের শাড়িটা শেকুল ইসলাম ভূইয়া ভাইয়ের দেওয়া, এটাও মিথ্যা; কারণ ওই শাড়িটা আমার বড় বোন মমতাজ মেহরুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাণিজ্য মেলা থেকে ৪৫০টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছিল। এখন আমাদেরকে তারা (সৎ ভাইয়েরা) প্রাণনাশের হুমকি দিতেছে। আমরা প্রতি মুহুর্তেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও সব জমি তারা বিক্রি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমন কি তারা জমি বিক্রি করিলে আমরা বাধা প্রদান করলে তাহারা (সৎ ভাইয়েরা) আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়, জমিতে পুতে দিবে, এমন কথাও বলছে। এখন প্রতিনিয়তই আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।
তাজুল ইসলাম ভূইঁয়া ভাই আমাদের করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে যে প্রতি উত্তর দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, মনগড়া, বানানো ও যুক্তিহীন। আমরা এই প্রতিবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
নিবেদক
সাইমুম মেহরুন
বরইচারা, পাকশিমুল
সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
(বিজ্ঞপ্তি)